নিকলী উপজেলার পাঁচরুখী গ্রামের সেলিনা হাস্যোজ্জ্বল মুখে তার দুই মাস বয়সী শিশুকে নিয়ে বের হচ্ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে। সেলিনার এই হাস্যোজ্জ্বল মুখ দেখে আগ্রহ জাগলো কথা বলার। জিজ্ঞেস করলাম, আপনাকে দেখে খুব আনন্দিত মনে হচ্ছে কারণ কি? তিনি উত্তরে বললেন, কে বলে আল্লাহ নেই। আল্লাহ না থাকলে আমার ছেলেটাকে বাঁচালো কে? ডাক্তার স্যার ফেরেশতা। স্যার না থাকলে আমার ছেলেটা বাঁচতো না, আল্লাহ স্যারকে পাঠিয়েছেন।
লিনার এই কথাগুলো শুনে জানার আগ্রহ বাড়িয়ে দিল। কারণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে রোগীদের আত্মীয়স্বজনের মুখে এমন স্বর্গীয় হাসি দেখা যায় না। নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কার্যালয়ে গিয়ে জানা গেল, গত ১ এপ্রিল (শুক্রবার) সেলিনা তার শিশু পুত্রকে নিয়ে আসেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন সেলিনার পুত্রটি স্বল্প ওজন সম্বলিত অপরিণত শিশু। চিকিৎসকরা তাদের সর্ব্বোচটুকু দিয়ে শিশুটিকে বাঁচিয়ে তুলেন। পরবর্তীতে ৬ এপ্রিল শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এখন শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ ও তার ওজন ২৪০০ গ্রাম।
সরজমিনে নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা নেয়া কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পরম মমতায় আমাদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। কোনো ক্লান্তি নেই। রোগীর মাথায় যখন পরম মমতায় হাত রাখেন তখনই অর্ধেক অসুখ ভালো হয়ে যায়। এমন বহু চিকিৎসক আছেন যাঁদের রোগীরা ঈশ্বরের রুপ বলেই মনে করেন। আসল কারণটা হল মানসিকতার পার্থক্য। সত্যিই কেউ কেউ আসেন মানুষের সেবা করতে। সরকারি হাসপাতালে আসা রোগীরা কিন্তু বিরাট কিছু চান না। ভাল ব্যবহার, রোগীর সঙ্গে একটু সময় নিয়ে কথা বলে চিকিৎসা করলেই রোগী ও তাঁর পরিবার খুশি।