কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শতাধিক সদস্যকে না জানিয়ে আগামী রবিবার(৪ ডিসেম্বর) এ নির্বাচন আয়োজনের পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ অভিযোগ রয়েছে কিশোরগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সেক্রেটারী লুৎফুর রহমান চৌধুরী হেলালের বিরুদ্ধে। জানযায় প্রভাব খাটিয়ে তার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান চৌধুরী ফিলিং ষ্ঠেশনে ইউনিট লেভেল অফিসার মোহাম্মদ মোতালিব মিয়া ও অফিস সহকারী আবদুল কাইয়ূম সহ সন্ত্রাসী পেটুয়া বাহিনী নিয়ে জোর করে প্রত্যাহার পত্র আদায় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ অবস্থায় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আনুষ্ঠানিক চিঠি না পেয়ে হতাশ সদস্যরা প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জানিয়েছে।
জানা গেছে, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, কিশোরগঞ্জ ইউনিটের সদস্যসংখ্যা ৮১৩জন। তিন বছর পর পর এর কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আগের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ১০ নভেম্বর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী ৪ ডিসেম্বর কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, নির্বাচনের বিষয়টি চিঠি মারফত সব সদস্যকে জানানোর নিয়ম থাকলেও শতাধিক সদস্যকে চিঠি দেওয়া হয়নি। ফলে নির্বাচন আয়োজনের খবর তারা যথাসময়ে পায়নি। যখন তারা এসব জানতে পরেছে, তখন সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়ে গেছে। নির্বাচন নিয়ে শুরু থেকে লোকচুরির ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের অভিযোগ।
নির্বাচন নিয়ে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ করে রেড ক্রিসেন্টের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, শফিকুল ইসলাম ও এনায়েত রাব্বি লিটন, আ. ন ম তানভীর হায়দার ভূইয়া বলেন, শুধু তারা নয়, তাদের মতো শতাধিক সদস্য এ নির্বাচনের খবর জানেন না। তাদের নির্বাচনে আমন্ত্রণ জানিয়ে কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। আবার নতুন অনেক সদস্যদের নামও ভোটার তালিাকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি।
কিশোরগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ইউনিট কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার শরফুদ্দিন ভূইয়া সবুজ জানান, একজন ভাইস চেয়ারম্যান, একজন সেক্রেটারি ও পাঁচজন সদস্যপদে নির্বাচন হবে। প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের জন্য সংরক্ষিত। নির্বাচনের পরে আরো চারজন সদস্যকে অন্তর্ভূক্ত করে নির্বাচিত কমিটি। তিনি জানান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারি পদে একজন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। পাঁচ সদস্যপদে ১৪টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হলেও জমা হয় ১৩টি। পরে আটজন তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে প্রতিটি পদে একজন করে প্রার্থী থাকায় সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন বলে ধরে নেওয়া যায়। আগামী ৪ ডিসেম্বর সধারণ সভা ও নির্বাচনের দিন তাদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হবে।
নির্বাচনের চিঠি না পাওয়া বিষয়ে সদস্যদের অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ডাকযোগে প্রতিটি সদস্যের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যার রেকর্ড আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। এ চিঠি অফিস সহকারী এম এম এ কাইয়ূমের মাধ্যমে ডাক যোগে প্রেরণ করা হয়েছে । এ ক্ষেত্রে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই।
তবে নির্বাচনে চিঠি না পাওয়া সদস্যদের অভিযোগ, যারা বিভিন্ন পদপদবীতে নির্বাচন করতে পারে, চিঠি না পাঠিয়ে কৌশলে নির্বাচনি প্রক্রিয়া থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া নির্বাচনি পুরো প্রক্রিয়াটাই কারা হয় অনেকটা সঙ্গোপনে। একটি সিন্ডিকেট পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। ফলে একটি পদেও নির্বাচন হচ্ছে না। সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে রয়েছেন। কাজেই লোক দেখানো প্রহসনের নির্বাচনটি বন্ধের দাবি করেছেন তারা।