সাইফুল্লাহ সাইফ :
হলুদের ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্তজোড়া মাঠ। কী অপরূপ সরিষার ক্ষেত! যতদূর চোখ যায় কেবল চারিদিকে শুধু হলুদ আর হলুদ। হেমন্তের ফসল তুলতে না তুলতেই শীতের আগমনে সরিষার হলুদ ফুলে ভরে গেছে কিশোরগঞ্জ জেলা সদর নীলগঞ্জের চৌধুরীহাটি গ্রাম। চির সবুজের বুকে এ যেনো কাঁচা হলুদের আলপনা। মনে হয় পৃথিবী বুঝি তার রঙ হারিয়েছে। শুধু কালের বিবর্তনে হলুদ রঙটা যেন এখনও টিকে আছে।
কিশোরগঞ্জ হলুদের সমারোহে সজ্জিত সরিষার প্রতিটি ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। সরিষার ব্যাপক ফলনে গ্রামীণ অর্থনীতিতে সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে।সরিষার জমিতে ফুলে ফুলে মৌমাছি মধু আহরণ করছে। চারিদিকে প্রকৃতির বুকে সুন্দরের আগুন। প্রকৃতি সেজেছে অপরূপ সৌন্দর্যের নান্দনিক রূপে। রাস্তার দুপাশে সরিষার হলুদ ফুলে ভরা দিগন্তজোড়া মাঠ। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে আসে। মন চায় সেই হলুদের মাঝে হারিয়ে যেতে। মাঠ ভরা সরিষা ক্ষেতের হলুদ মাঠে এক ফুল থেকে অন্য ফুলে মৌমাছিরা মনের আনন্দে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত। হলুদের মাঠে কৃষকের স্বপ্ন খেলা করছে এখন। সরিষা চাষ লাভজনক হওয়ায় চাষিরা এখন ঝুঁকে পড়ছেন সরিষা চাষে। কেউবা সরিষার বীজ তৈরি করেও লাভবান হচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কিশোরগঞ্জের সরিষার চাষে ভালো ফলনের আসা করছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) কিশোরগঞ্জের নীলগঞ্জের চৌধুরীহাটি গ্রামে সরিষার এমনি ক্ষেত দেখা যায়। এ গ্রামের সরিষা চাষি সুমন মিয়া জানান, তিনি আট বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। প্রতি বিঘায় তার ব্যয় হয়েছে ৪-৫ হাজার টাকা করে। ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ৮ থেকে ১০ মণ সরিষা আসবে। গত বছর প্রতি মণ সরিষা বিক্রি করেছেন ৩-৪ হাজার টাকায়।
বাজারদর ভালো পেলে এবারও তিনি সরিষা বিক্রি করে লাভবান হবেন এমনটাই প্রত্যাশা। সরিষার ফুল আসে এক মাস পর। দেড় মাস পর ফুলে সরিষা ধরে। চাষের তিন মাস পর সরিষা পরিপক্ব হয়।
কৃষি উদ্যোক্তা মনোয়ার হোসাইন রনি জানান, কিশোরগঞ্জে আরো ব্যাপক হারে সরিষার আবাদ করা উচিত। তাহলে মৌ চাষ করে মধু সংগ্রহ করে তরুন কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি হবে।
কিশোরগঞ্জ কৃষি কর্মকর্তা বলেন, সরিষার জমি তে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য সঠিক কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।
চলতি বছর এ উপজেলায় ৮ হাজার ৩’শ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এঁটেল মাটিতেও সরিষা চাষ হয়। এঁটেল-দোঁআশ মাটিতে সরিষার চাষ সব থেকে ভালো হয়। সঠিক পরিচর্যা পেলে ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার কিশোরগঞ্জে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।