যে বৃক্ষ মুমিনের উপমা

আবদুল্লাহ ইবন ওমর (রা.) বলেন, একদিন আমরা রাসুল (সা.)-এর কাছে বসেছিলাম। এমন সময় তিনি আমাদের বলেন, তোমরা আমাকে এমন একটি বৃক্ষ সম্পর্কে বলো, যার পাতা পড়ে না এবং অমুক অমুক অমুকগুলো পতিত হয় না। যা সর্বদা খাদ্য প্রদান করে থাকে। ইবন ওমর (রা.) বলেন, আমার মনে ধারণা হলো যে এটি খেজুরগাছ। কিন্তু আমি দেখলাম যে আবু বকর ও ওমর কিছুই বলছেন না। তখন আমি কিছু বলাটা অপছন্দনীয় মনে করলাম। যখন তারা কিছুই বললেন না, তখন রাসুল (সা.) বলেন, সেটি হলো খেজুরগাছ। অতঃপর যখন আমরা উঠলাম, তখন আমি ওমর (রা.)-কে বললাম, হে আব্বা, আল্লাহর কসম! আমার মনে এ কথাই উদয় হয়েছিল যে ওটা খেজুরগাছ। তখন তিনি আমাকে বললেন, ‘কোনো বস্তু তোমাকে বলতে নিষেধ করেছিল?’ আমি বললাম, আপনারা কিছু বলছেন না দেখে আমি কিছু বলাটা অপছন্দনীয় মনে করেছিলাম। তখন ওমর (রা.) বললেন, ‘তোমার বলাটা আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় ছিল অমুক অমুক বিষয়ের চেয়ে।’ (বুখারি, হাদিস ৪৬৯৮)। ইবন ওমর (রা.) বলেন, ‘আমি ধারণা করি, তিনি বলেছিলেন, সর্বোত্তম লাল উট কোরবানি করার চেয়েও (তোমার বলাটা আমার কাছে বেশি প্রিয় ছিল)। (সহিহ ইবন হিব্বান, হাদিস : ২৪৩)
এ ঘটনায় কয়েকটি শিক্ষণীয় বিষয় আছে—যেমন :
১. শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রদের পরীক্ষা নেওয়া।
২. ছাত্র বা শিষ্যদের মেধা যাচাই করা।
৩. কঠিন বিষয়ে মাথা খাটানো শেখা।
৪. সঠিক জবাব দিতে লজ্জা না করা।
৫. খর্জুর বৃক্ষের কাণ্ড, মাথা, পাতা, ফল, রস সবই বরকতময়।
৬. খেজুরগাছ মুমিনের জীবনের সঙ্গে তুলনীয়। কারণ শত ঝড়-ঝঞ্ঝাতেও খেজুরগাছের শাখা পতিত হয় না। তেমনি শত বিপদেও মুমিনের জীবন থেকে ঈমান ও নেক আমল পতিত হয় না। আর খর্জুর বৃক্ষের সব কিছু অন্যের কল্যাণে সৃষ্ট। তেমনি মুমিন জীবনের সবটাই সৃষ্টির কল্যাণে নিবেদিত।