:: ইসলামিক ডেস্ক ::
উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম ও বিশিষ্ট বুজুর্গ আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ শফি (রহ.) আত্মিক পরিশুদ্ধি লাভের একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস বর্ণনা করেছেন। যেখানে তিনি আত্মিক পরিশুদ্ধি লাভে সহায়ক আমলগুলো তুলে ধরেছেন। ‘দিল কি দুনিয়া’ নামক গ্রন্থে উল্লিখিত আমলগুলোর কয়েকটি তুলে ধরা হলো।
১. প্রথম পরামর্শ হলো, আপনি দিন-রাতের জরুরি কাজগুলো মাথায় রেখে একটি কর্মসূচি তৈরি করে নিন। কেননা সূচি অনুযায়ী কাজ করলে তাতে খুবই বরকত হয়। অল্প সময়ে বেশি কাজ করা যায়। আল্লাহর রহমতে কঠিন কাজও সহজ হয়ে যায়।
২. শরিয়তের বিধি-বিধানের ওপর আমল করা সর্বাবস্থায় আবশ্যক। তাই শরিয়তের বিধান মেনে চলার সর্বাত্মক চেষ্টা করা।
৩. যথাসম্ভব জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা। শরয়ি অপারগতা ছাড়া মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করা থেকে বিরত থাকবে না। মসজিদের শিষ্টাচারগুলো রক্ষার চেষ্টা করবে।
৪. প্রতিদিন ফজর নামাজের পর অথবা নিজের সুবিধাজনক সময়ে নিম্নোক্ত আলমগুলো যত্নের সঙ্গে করা। যেমন—
ক. প্রতিদিন এক পারা কোরআন তিলাওয়াত করা। তবে কোনোভাবেই এক-চতুর্থাংশ পারার কম পাঠ করবে না। চেষ্টা করবে তাজবিদসহ তিলাওয়াত করতে।
খ. তিলাওয়াতের পর মুনাজাতে মাকবুল থেকে এক মনজিল পাঠ করবে। সম্ভব না হলে আধা মনজিল। এ সময় অর্থের প্রতি খেয়াল রাখবে।
গ. ১০০ বার করে ইস্তিগফার ও দরুদ পাঠ করা।
ঘ. কমপক্ষে ৫০০ বার ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পাঠ করা।
ঙ. প্রত্যেক নামাজের পর সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, চার কুল ও তাসবিহে ফাতেহি পাঠ করা।
চ. এশার নামাজের পর এবং শোয়ার আগে মাসনুন দোয়া ও সুরা পাঠ করা। যেমন—তিন কুল, আয়াতুল কুরসি, সুরা মুলক, সুরা বাকারার শেষাংশ, সুরা আলে ইমরানের শেষাংশ, দরুদ শরিফ ইস্তিগফার ইত্যাদি।
৫. দৈনন্দিন কাজে মাসনুন দোয়াগুলো পাঠ করা। যেমন—খাওয়া, পান করা, ঘুমানো, ঘুম থেকে ওঠা, মসজিদে প্রবেশ করা ও বের হওয়া, টয়লেটে প্রবেশ করা ও বের হওয়া ইত্যাদি সময় দোয়া পড়া।
৬. মাঝে মাঝে আল্লাহওয়ালা ও বুজুর্গদের সান্নিধ্যে যাওয়া এবং তাঁদের কাছ থেকে উপদেশ ও দোয়া নেওয়া। এ ছাড়া যথাসম্ভব সুন্নতের অনুসারীদের ভালো মানুষের সঙ্গে চলাফেরা করা।
৭. প্রতিদিন কিছু সময় বুজুর্গদের কিতাব পাঠ করা। বিশেষভাবে হাকিমুল উম্মত আল্লামা আশরাফ আলী থানভি (রহ.)-এর ওয়াজ ও বাণী সংকলন এবং কিতাব ‘তারবিয়াতুস সালিকিন’ নিয়মিত পড়া।
উল্লিখিত কাজগুলোকে অন্যান্য কাজের ওপর প্রাধান্য দেওয়া।