ঝালকাঠিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ সফল করতে শহরের ইজিবাইক বন্ধ রেখে চালকদের কর্মসূচিতে অংশ নিতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। এতে সকাল থেকে শহরে যানবাহন না পেয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে চলমান অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বিপাকে পড়েন। এ ঘটনায় অনেক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঝালকাঠি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও সদরের কেওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু সাইদ খানের নির্দেশে ইজিবাইকের চালকেরা সকাল থেকে ইজিবাইক বন্ধ রেখে জেলা আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন। এর আগে সকাল থেকেই তাঁরা শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড়ে জড়ো হতে থাকেন।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার থেকে ঝালকাঠি শহরের দুটি সরকারি ও তিনটি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আজ শনিবার সকালেও বিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা ছিল। কিন্তু একই সময় ইজিবাইক বন্ধ রেখে চালকেরা আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কারণে দূর-দূরান্তের পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা দুর্ভোগে পড়েন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, সরকারি দলের নেতারা নিশ্চয় জানেন সব বিদ্যালয়ে একযোগে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা চলছে। তারপরও ইজিবাইক বন্ধ রেখে চালকদের সমাবেশে যেতে বাধ্য করা ঠিক হয়নি। বিদ্যালয়গুলোতে অনেক আওয়ামী লীগের নেতার সন্তানেরাও পড়ে। তারাও তো দুর্ভোগে পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইজিবাইকচালক বলেন, ‘নেতার নির্দেশে গাড়ি বন্ধ করে আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে যেতে বাধ্য হয়েছি। এতে আজ সারা দিনের রোজগার অর্ধেক কমে গেছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝালকাঠি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু সাইদ খান বলেন, মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য ইজিবাইক বন্ধ রাখা হয়েছে। সমাবেশ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আবার ইজিবাইক চালু করা হবে।
অটোরিকশা শ্রমিকদের সমাবেশে অংশ নেওয়ার বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরুণ কর্মকার বলেন, বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেওয়া অটোরিকশা শ্রমিকেরা বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক। তাঁরা দলকে ভালোবেসেই সমাবেশে অংশ নিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।