আলাউদ্দীন শুভ, কিশোরগঞ্জ :
টাকার জন্য বন্ধুদের নিয়ে বাবাকে গলাকেটে হত্যা করেছে ছেলে। হত্যার সময় ধান ক্ষেতে বাবার মাথা চেপে ধরেন ছেলে সোহেল মিয়া। গত ১৯ অক্টোবর রাতে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের সুলতানপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের কাছে জবানবন্দিতে বাবাকে গলাকেটে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন নিহতের ছেলে গ্রেপ্তার সোহেল মিয়া।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, কৃষক নিবু মিয়ার হত্যাকান্ডের ঘটনার সাথে নিহত কৃষক নিবু মিয়ার ছোট ছেলে সোহেল সহ আরও তিন জন মোঃ বাবুল মিয়া (৩২) মোঃ সোহেল মিয়া (২৪) মোঃ নজরুল ইসলাম (৪৫) মোঃ সুমন মিয়া (২৬) জড়িত ছিল। পরে এ ঘটনায় তাদের ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তাদের স্বীকারোক্তিতে তারা ঘটনা সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
তিনি আরও বলেন, মামলা দায়েরের পর পুলিশের একটি দল প্রযুক্তিগত ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বাজিতপুর উপজেলার দক্ষিণ পিরিজপুর বাজার এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত আসামি মো. বাবুল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। আসামি নিজেই স্বীকারোক্তি দেয় ভিকটিমের সঙ্গে থাকা নগদ ৭০ হাজার টাকা খুনিরা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে যায়। আসামি বাবুল মিয়ার তথ্যে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ভিকটিমের ছোট ছেলে সোহেল মিয়াসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, এক বছর আগে ভিকটিম নিবু মিয়া জমি বিক্রি করেন ২১ লাখ টাকা। সে টাকা থেকে ছয় লাখ টাকা দিয়ে তার ছোট ছেলে সোহেল মিয়াকে বিদেশে পাঠায়। কিন্তু সোহেল বিদেশে থাকতে পারেনি। দেশে চলে এলে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন তিনি। সংসার চালাতে এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে পুরাতন অটোরিকশা কিনেন সোহেল। কিন্তু সোহেল তার বাবার কাছে জমি বিক্রির আরও যে টাকা ছিল তা তাকে দিতে বলে। এ টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। ভিকটিম নিবু মিয়া টাকাগুলো তার সঙ্গে রাখতেন।
উল্লেখ্য, গত ২০অক্টোবর দুপুরে উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে নিজ বাড়ির পাশের ধান ক্ষেত থেকে হাত-পা বাঁধা গলাকাটা অবস্থায় কৃষক নিবু মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই দিন তার অন্য ছেলে আব্দুর রহমান হৃদয় বাদি হয়ে বাজিতপুর থানায় (মামলা নং-১৬) একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।